বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা এর খসড়া আইনের মিটিং স্থগিত ও শিক্ষার্থী, পেশাজীবীদের বিক্ষোভ মিছিল।
বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা এর খসড়া আইনের মিটিং স্থগিত ও শিক্ষার্থী, পেশাজীবীদের বিক্ষোভ মিছিল।
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠনের দাবিতে সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার্থীরা টানা ৪৬ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ন্যায্য দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন দেশের সকল ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী সংগঠনসমূহ।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করায় মিরপুর-১০ নম্বরে অবস্থিত সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসটিতে গত ৪৬ দিন ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
আজ ১৪ আগস্ট, রাজধানীর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেন তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী-সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ, রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিক্যাল কলেজ (লক্ষ্মীপুর) এবং হামদর্দ ইউনানি মেডিক্যাল কলেজ (বগুড়া)।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আলাদা কাউন্সিল ছাড়া এ চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বারবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ ১৯৯৬ সালের নীতিমালায় স্পষ্টভাবে BMDC-এর আদলে একটি পৃথক কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হয়েছিল।
আইন কাউন্সিলের ফাইলটা বর্তমানে সচিবালয় পর্যন্ত আছে এবং গত ১১ই আগস্ট, সচিবালয়ের ওয়েবসাইট থেকে কাউন্সিলের খসড়াটি প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত খসড়াটিতে কয়েকটি বড় ধরনের অসংগতি প্রকাশ পায়, এই অসংগতিগুলো সংশোধনপূর্বক সচিব এর সাথে মিটিংয়ে বসবেন বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিগন।
শেষ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, "১৯৯৬ সালের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালায় বলা হয়, অস্থায়ীভাবে রেজিস্ট্রেশন প্রদানের পাশাপাশি একটি স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠন করা হবে। কিন্তু ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে চিকিৎসকদের আইনি জটিলতা, উচ্চশিক্ষায় বাধা, নিয়োগ-সংক্রান্ত সমস্যা ও পেশাগত নিরাপত্তার ঘাটতির মতো গুরুতর সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে, সরকারিভাবে ৩৬তম ব্যাচে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হলেও আন্দোলনের কারণে ১৩ জুলাই পর্যন্ত কেউ ভর্তি হতে পারেনি। উল্লেখ্য, প্রতি বছর ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বিভাগে যথাক্রমে ২৫ জন করে মোট ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। কিন্তু চলমান অচলাবস্থার কারণে এই বছর ভর্তি কার্যক্রম প্রায় ব্যর্থ হতে চলেছে। শিক্ষার মৌলিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। গত ১৩ জুলাই শেষ দিন হলেও আন্দোলনের প্রেক্ষিতে হয়তো এবারও কেউ ভর্তি হতে পারবে না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠন না হওয়া পর্যন্ত তারা কাউকে ভর্তির সুযোগ দিতে প্রস্তুত নন। তাদের দাবি-বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য এই কাউন্সিল জরুরি। অধ্যাদেশকে বিলম্বিত করার জন্য একটি কুচক্রী মহল আজকের এই মিটিংটি বাদ দিয়ে দেই, তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, শিক্ষক, সকলে বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে পল্টন এবং সচিবালয়ের মূল ফটকের গেট হয়ে রাজু ভাস্কর্য তাদের মিছিলটি শেষ করেন এবং রাজু ভাস্কর্যে তাদের আন্দোলনের বিভিন্ন দাবি ও অসঙ্গতি তুলে ধরেন। তাই প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স